আট থেকে আশি সন্ধ্যে হলেই বসে পড়ে টিভি খুলে বাংলা সিরিয়ালে !
আর এই কাজে তাদের অধিকাংশেরই পছন্দ দুই চ্যানেল ! ষ্টার জলসা এবং জী বাংলা।
হতে পারে আপনার ষ্টার জলসার প্রিয় সিরিয়াল কিংবা জী বাংলার সিরিয়ালের সময় আলাদা। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন যদি আপনার দুই প্রিয় অভিনেত্রী আলাদা ভাবে দুই চ্যানেলে একই গল্পের সিরিয়ালে অভিনয় শুরু করেন ???
কখনো হয়নি ঠিকই। কিন্তু এবারে তাইই হতে চলেছে।
জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘ইচ্ছেনদী’ র মেখলা ওরফে অভিনেত্রী সোলঙ্কি রায় রীতিমতো প্রস্তুত ‘বকুলকথা’ র বকুল ওরফে উষসী রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে । স্টার জলসা ও জি বাংলা– দুটি চ্যানেলেই আসছে বাংলার প্রথম চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের বায়োপিক। জি বাংলা-র ধারাবাহিকে কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের ভূমিকায় দেখা যাবে ঊষসী রায়কে। আর স্টার জলসা-র ধারাবাহিকে এই চরিত্রে দেখা যাবে সোলাঙ্কি রায়কে।
বাংলা টেলিজগতে সম্মুখ সমর বলা যায়।ছোট পর্দায় কনসেপ্ট নিয়ে টানাটানির খেলা কিন্তু বহু পুরনো। যে কারণে চ্যানেলগুলি তাদের নতুন শো নিয়ে প্রচণ্ড গোপনীয়তা বজায় রাখে। কনসেপ্ট, অভিনেতা দুই-ই চুরি যাওয়ার বিস্তর সম্ভাবনা রয়েছে।

একটি চ্যানেল সদ্য তাদের শোয়ের প্রোমো আপলোড করে যে তাদের শো কিংবদন্তি মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনের আধারে তৈরি। যেখানে নামভূমিকায় রয়েছেন ঊষসী রায়, যাঁর ধারাবাহিক ‘বকুল কথা’ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এই চ্যানেলের প্রোমো অনএয়ার হতেই অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী চ্যানেল ‘কাদম্বিনী’ নামেই তাদের নতুন শোয়ের টিজ়ার প্রকাশ করে। দুই চ্যানেলের বিষয়বস্তু একই কি না, তা নিয়ে ধন্দে সকলেই ! ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় এল প্রোমো এবং এই প্রোমোতেই সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটল।
১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধেবেলা স্টার জলসার ফেসবুক পাতায় একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে শুধু জানানো হয় ‘কাদম্বিনী’ নামের একটি ধারাবাহিক আসতে চলেছে। ঠিক তারপরই জি বাংলার ফেসবুক পাতায় পোস্ট করা হয় ‘কাদম্বিনী’র প্রোমো। আর এরপরই ধন্দ্বে পড়ে দর্শক। অনেকে তো প্রশ্নই করে বসেন, আসলে কোন চ্যানেলে আসছে ধারাবাহিকটি।

তবে স্টার জলসা-র ধারাবাহিকটির নাম একটু আলাদা। প্রথম যখন টিজার মুক্তি পায়, তখন নাম রাখা হয়েছিল শুধুই ‘কাদম্বিনী’। কিন্তু দুই চ্যানেলে যেহেতু একই ব্যক্তিত্বকে নিয়ে বায়োপিক তাই দর্শক একটু ধন্দে পড়তে পারেন। সেই কারণেই সম্ভবত স্টার জলসা-র ধারাবাহিকটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘প্রথমা কাদম্বিনী’।
এই গল্পটি একেবারে অন্য ধারার ৷ ১৮৯২-এর কলকাতা ৷ প্রায় ২০০ বছর আগের সেই বাংলা আর আজকের বাংলার মধ্যে অনেক তফাৎ ৷ সেই যুগে মেয়েরা ছিলেন পর্দানশীন ৷ আবার সেই যুগেই বাংলায় জন্মেছিলেন সেই তেজস্বিনী নারী ৷ পুরুষদের পায়ে পা মিলিয়ে যিনি ডাক্তারি পড়েছিলেন ৷ হয়েছিলেন বাংলার প্রথম মহিলা ডাক্তার ৷ সে এক বিশাল লড়াইয়ের কাহিনী ৷ তাঁর নাম কাদম্বিনীদেবী ৷ধারাবাহিকের কাহিনী তাঁকেই অবলম্বন করে। ১৮৮৩ সালে, যখন বাঙালি মেয়েদের পড়াশোনা ছিল চাঁদে হাত বাড়ানোর মতো বিষয়, তখন কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় ও চন্দ্রমুখী বসু গ্র্যাজুয়েট হন। তাঁরাই ছিলেন ভারতের প্রথম দুই মহিলা গ্র্যাজুয়েট। এর দু’বছর পর চিকিৎসাশাস্ত্রে স্নাতক হন কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়। বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ থেকে ডিগ্রি নেন তিনি। তারপর বিদেশে পাড়ি দেন। ১৮৯২ সালে দেশে ফিরে ডাক্তার হিসেবে প্র্যাকটিস শুরু করেন তিনি।
কনসেপ্ট নিয়ে এই লড়াই আর ছোটপর্দার এইসব কান্ডকারখানা বোঝা মোটেই সহজ নয় !
এবার অপেক্ষা স্লট ঘোষণার। কোন চ্যানেল আগে স্লট ঘোষণা করে তার অপেক্ষা। তবেই জমবে প্রতিযোগিতা !