‘ইয়াং অ্যাংরি ম্যান’ হিসেবেই পরিচিত অভিনেতা জয় কুমার মুখার্জি। ফের ২০১৮ সালের ভুলের পুনরাবৃত্তি করলেন বাংলা টেলিদুনিয়ার জনপ্রিয় অভিনেতা জয় মুখোপাধ্যায়। সেসময় তাঁর তৎকালীন প্রেমিকা অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এবার বছর দুয়েকের মাথায় ফের একই কাণ্ড ঘটালেন অভিনেতা জয়। দিন কয়েক আগেই মহিলা সহকর্মীর গায়ে হাত তোলার জন্য ‘জিয়নকাঠি’ ধারাবাহিক থেকে বাদ পড়েছেন অভিনেতা জয় মুখোপাধ্যায়।
অভিনেতা জয় মুখোপাধ্যায়ের অভিনয় জীবন শুরু হয় ২০০৯ সালে, ‘লক্ষ্যভেদ’ ছবি দিয়ে। ২০০৯ থেকে ২০১২-র মধ্যে ১০টি ছবিতে অভিনয় করেন জয়। এর মধ্যে সবচেয়ে সফল ছবি ছিল তথাগত ভট্টাচার্যের অস্ত্র। কিন্তু বাংলার দর্শকের কাছে তিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ‘চোখের তারা তুই’ ধারাবাহিকের নায়ক আয়ুষ চ্যাটার্জি চরিত্রে। টেলিভিশনে তিন বছরের বিরতির পরে আবারও ফিরছেন তিনি।
‘লক্ষ্যভেদ’ ছবি দিয়ে শুরু করলেও ২০১০ সালের ছবি ‘হ্যাংওভার’ থেকেই বাংলা ছবির দর্শকের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। ওই বছরই মুক্তি পায় রাজা চন্দের ‘টার্গেট’। ওই ছবির নায়িকা ছিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওটাই ছিল সায়ন্তিকার ডেবিউ ছবি। রাজা চন্দেরও প্রথম ছবি। ‘টার্গেট’ থেকেই অ্যাংরি ইয়ং ম্যান নায়কের একটা ইমেজ তৈরি হয় জয়ের। কিন্তু ২০১২ সালে ‘বাওয়ালি আনলিমিটেড’র পরে টানা ২ বছরের বিরতি।
এর পরেই ২০১৪ সালে স্টার জলসা-য় শুরু হয় ‘চোখের তারা তুই’ ধারাবাহিকের সম্প্রচার। আয়ুষ কুমার চ্যাটার্জি চরিত্রে জয় মুখোপাধ্যায় অত্যন্ত সমাদৃত হন বাংলার দর্শকের কাছে। ২০১৬ সালে ধারাবাহিকটি শেষ হওয়ার পরে আর একটিই বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন জয়– ২০১৭ সালে রবি কিনাগি-র ‘আমি যে কে তোমার’। মাঝে প্রায় দুবছরের বিরতি কাটিয়ে ‘জিয়নকাঠি’ তে আবারও ফিরে ছিলেন জয় নতুন চরিত্রে। এই ধারাবাহিকেও একটা অ্যাংরি ইয়ং ম্যান ছাপ ছিল নায়কের চরিত্রে।গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে রাত ৮টার স্লটে সম্প্রচার শুরু হয়েছে ধারাবাহিকের। জয় মুখোপাধ্যায়ের এই প্রত্যাবর্তনে টেলিপাড়ার অনেক তারকারাই হয়েছিলেন বেশ খুশি। কিন্তু ঘটিয়ে ফেলেন বিপত্তি !
ঠিক কি ঘটেছিলো সেদিন ? শুটিং চলাকালীনই অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মাকে মারধর করেন তিনি। যে অভিযোগের ভিত্তিতে রাতারাতি জয়কে ধারাবাহিক থেকে সরিয়ে দিয়েছে প্রযোজনা সংস্থা। তবে এই একই প্রশ্ন সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জয় কে করা হলে তিনি জানান , “না, চড় মারিনি। ঘটনাটা ঘটার পাঁচ মিনিট আগেও ঐন্দ্রিলার সঙ্গে আমার খুব ইয়ার্কি-ঠাট্টা হচ্ছিল। আমাকে শটে ডাকা হয়েছিল। এসপি (সাজেশন প্রেফারেন্স) শট ছিল। সেটের সবাই রেডি। সাজেশনে আমি আর প্রেফারেন্সে ছিলেন আমার সহ অভিনেত্রী (ঐন্দ্রিলা)। কিন্তু তিনি অনেক ক্ষণ ধরে ফোনে কথা বলছিলেন।আমি বলেছিলাম, সেটের বাইরে গিয়ে ফোনে কথা বলে যখন রেডি হবে তখন শটে আসতে। তখন উনি বললেন, “ও শট দিক, আমি চললাম।“তার উত্তরে আমি বলেছিলাম, “আপনি শট দিন। আমি চললাম।“দুজনেই একসঙ্গে বেরিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু সরু দরজা। দুজন একসঙ্গে বেরোনো সম্ভব নয়। বেরোনোর জায়গা করে নেওয়ার জন্য ওনার হাতটা ধরে সরিয়ে আমি বেরিয়েছি, বেরোনোর জন্য যেটুকু টাচ করা হয়। দিস ওয়াজ দ্য অনলি টাইম আই টাচড হার। উনি তখন আমাকে বললেন, “হাউ ডেয়ার ইউ টাচ মি!”তখন একটা হিটেড কনভারসেশন স্টার্ট হয়। উত্তেজিত হয়ে কথা বললে এক্সাক্টলি সব কথা তো মনেও থাকে না। কিন্তু থিঙ্কস গট আগলি। পরে ওঁর ইন্টারভিউয়ে পড়ছিলাম আমি নাকি ওঁকে হেড ব্যাং করেছি, অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছি।”
এবার তারই পরিবর্তে ‘জিয়নকাঠি’তে ঋষির চরিত্রে দেখা যাবে টেলিভিশনের আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা সোমরাজ মাইতিকে।
তবে কি জয় মুখার্জী আর কোনো টিভি শো তে কাজ ই করবেন না ?
এর জবাবে তিনি জানান , ” বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে যখন ব্যান হয়েছি… এরকম তো নয় যে এই ইন্ডাস্ট্রিতেই আমার বন্ধুরা আছে। দেশের অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিতেও আমার বন্ধু আছে যারা হয়তো ভাবে না আমি মেয়েদের সঙ্গে ‘খারাপ’ ব্যবহার করে থাকি। সেইসব জায়গাগুলো অ্যাকসেস করার চেষ্টা করছি।সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্মাইনি যে বাড়িতে বসে বসে কাটিয়ে দেব।”