ভালোবাসা যদি সত্যি হয় তাহলে শত ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যেও ঠিক সে তার পথ খুঁজে নেয়। কারোর অন্ধকারময় জীবনে আলোর পথ দেখায় ভালোবাসা। এরকমই এক ভালোবাসার গল্প নিয়ে স্টার জলসায় শুরু হয়েছে গত বছর ১লা জুলাই নতুন ধারাবাহিক ‘সাঁঝের বাতি’।এই ৮ মাসের জার্নি তে অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই সিরিয়ালের মুখ্য চরিত্র চারু এবং আর্য। গল্পটা ভীষণ ইন্টারেস্টিং। চারু ও আর্যমান এবং ঘোষ ও মল্লিক পরিবারের বিভিন্ন ঘটনাবলী এই ধারাবাহিকের মূল প্রেক্ষাপট।
চারু ঘোষ গ্রামের মেয়ে এবং গ্রামেই বসবাস। চারু ছাড়াও তার পরিবারে আছে বাবা, সৎ মা এবং সৎ বোন। সারা গ্রামের মানুষ চারুকে পয়মন্ত মনে করলেও বাড়িতে তার কপালে জোটে সৎ মায়ের গঞ্জনা, অত্যাচার। চারুর ভূমিকায় আছে মিষ্টি মেয়ে দেবচন্দ্রিমা সিংহ রায়। এর আগে ‘কাজল লতা’ এবং ‘টেক্কা রাজা বাদশা’ ধারাবাহিকেও দেখা গেছে দেবচন্দ্রিমাকে। এটি তার তৃতীয় ধারাবাহিক।

দুই পরিবারের একজন গ্রামের দুধ বিক্রেতা। অন্যজন উত্তর কলকাতার প্রসিদ্ধ মিষ্টি বিক্রেতা। দুই পরিবারের মধ্যে যোগাযোগের অনুঘটক ঘোষ বাড়ির মেয়ে চারু আর আর্যমান । মা মরা মেয়ে চারু বাবার খুব আদরের। সত মা ঝুম্পা তাঁকে দেখতে পারেন না। আর সত বোন চুমকি চেষ্টা করে কী করে নিজের কোলে ঝোল টানা যায়। বাবার ব্যবসা সামলানো চারুর স্বপ্ন, মিষ্টির বড় দোকান খোলার। আর তার বাবা মেয়ের ওপর নিশ্চিন্তে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে নিজে পড়াশোনা করে গ্রামের লোকেদের কবিরাজি চিকিতসা করেন।
প্রমো তে দেখা গেছিলো ,একদিন দুধ বিক্রি করতে গিয়ে একটি চলন্ত গাড়ির সামনে এসে পড়ে চারু। কোনোমতে নিজেকে সামলে বলে ওঠে চালককে, আপনি চোখে দেখতে পান না? এভাবে কেউ গাড়ি চালায়! কিছুক্ষণের মধ্যেই চারু বোঝে ওই গাড়ির চালক আর্যমান মল্লিক সত্যিই চোখে দেখতে পায় না। এরপরেই আস্তে আস্তে সম্পর্ক দানা বেঁধে ওঠে দুজনের মধ্যে। এক সাক্ষাৎকারে বি বি এ সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী দেবচন্দ্রিমা জানিয়েছিলেন , “চরিত্রটা আমার কাছে বেশ অন্যরকম। যেটা করতে গিয়ে আমার একটু অসুবিধা হচ্ছে কিন্তু সেটা আমি মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আসলে চরিত্রটা করার আগে একটু ফাঁকিবাজি করেছিলাম। আর ফাঁকিবাজি করলে তার ফল তো ভুগতেই হয়। তবে বেনী’দির কাছে আমি ওয়ার্কশপ করেছিলাম সেটা খুব হেল্প করেছে আর আমাদের ডিরেক্টরও যথেষ্ট সাপোর্ট করেছেন। ধারাবাহিকে আমার পরিবারের দুধের ব্যবসা হলেও নিজে দুধের থেকে বেশি মিষ্টি খেতেই পছন্দ করি। মিষ্টির একটা বড় অংশ এই ধারাবাহিকে আছে, তাই বেশ ভালোও লাগছে।”
বেশ কয়েকদিন পর আবার একটি খল চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রী কাঞ্চনা মৈত্রকে। ‘সাঁঝের বাতি’তে কাঞ্চনা ঝুম্পা ঘোষের ভূমিকায়। ঝুম্পা ঘোষ চারুর সৎ মা। যিনি সারাক্ষণ বিভিন্ন ফন্দি এঁটে চারুকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেন। ঝুম্পা ঘোষ আসলে একজন খুব লোভী মহিলা এবং তার সাজপোশাকও খুব অদ্ভুত।
এরপর আছে মল্লিক পরিবারের গল্প। মল্লিক পরিবার এমন একটা পরিবার যেখানে নারীদের কর্তৃত্বই বেশী। এহেন পরিবারের সর্বময় কর্ত্রী মল্লিকা মল্লিক। মল্লিক পরিবারের পারিবারিক মিষ্টির ব্যবসার যথেষ্ট সুখ্যাতি। স্বামী, দুই ছেলে, বৃদ্ধা শাশুড়ি, দেওর – জা নিয়ে ভরা সংসার মল্লিকার। মল্লিকা একাধারে সংসারও সামলায় এবং ব্যবসাও দেখে। অসম্ভব ব্যক্তিত্বময়ী চরিত্র মল্লিকা মল্লিক। তার বড় ছেলে সানি একটি দুর্ঘটনায় তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে তাও মল্লিকা তার ছেলেকে নিয়ে যথেষ্ট গর্বিত। মল্লিকা প্রতিজ্ঞা করে ছেলের জন্য ‘ঘর আলো করা বউ’ আনবে। ঘটনাচক্রে তাঁর বড় ছেলে আর্যমান তথা সানির সাথে আলাপ হয় চারুর। মল্লিকা মল্লিকের চরিত্রে থাকছেন জুন মালিয়া। একটি কেন্দ্রীয় চরিত্র আর্যমানের ভূমিকায় অভিনয় করছেন রেজওয়ান রাব্বানি শেখ। জন্মের পর থেকে দৃষ্টিশক্তি থাকলেও, একটি দুর্ঘটনায় দৃষ্টিশক্তি হারায় আর্যমান।ভানু ঘোষ তথা চারুর বাবার ভূমিকায় অভিনয় করছেন রতন সরখেল। মল্লিকার শাশুড়ির ভূমিকার অনুরাধা রায়, মল্লিকার ছোট ছেলে অংশুমানের ভূমিকায় সৌম্যদীপ সিংহ রায় এবং চারুর সৎ বোন চুমকির ভূমিকায় দীপান্বিতা রক্ষিত।
এখন অনেক ছন্দ পতনের পর চারু আর্য এর জীবনে কি ঝড়
আসতে চলেছে তা জানতে প্রতিদিন সন্ধ্যে ৬টায় দেখতে হবে ‘সাঁঝের বাতি’