নিজেকে নানা চরিত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে জুড়ি নেই টলিউড অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের।এবার ক্রাইম রিপোর্টারের ভূমিকায় হাজির হচ্ছেন এই অভিনেতা।বছরের শুরুতেই ‘ধর্মযুদ্ধ’-এর মহরত হয়েছে। তারই মধ্যে ক্রাইম রিপোর্টারের ভূমিকায় পর্দায় আসার প্রস্তুতি শুরু করেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। এমনিতেই বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে থাকেন তিনি, সঙ্গে প্রযোজনা-পরিচালনা তো রয়েইছে। পরমের শেষ পরিচালিত ছবি ‘সোনার পাহাড়’ যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছে।পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় একটি পত্রিকার পাতা শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেন, ‘ছবিটি এক ক্রাইম রিপোর্টারের গল্প। যে ১৬ বছরের পুরোনো খুনের রহস্যভেদের জন্য নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছে। সে কি সফল হতে পারবে? রহস্যভেদই বা হবে কী করে? এই নিয়েই ছবি।’অন্যদিকে, সংবাদপত্রের পাতার শিরোনাম, ‘পারসি মহিলা খুনের মামলা’।
আর ওই ছবিতে দেখা যায়, পুলিশ কর্মকর্তার পাশে হাঁটু গেড়ে বসে তিনি সংবাদ লেখায় ব্যস্ত রয়েছেন।পরিচালক অনিন্দ্য বিকাশ দত্তর ছবি ‘শকুনের লোভ’, এই ছবিতেই প্রায় ১৬ বছরের পুরনো মার্ডার রহস্য নিয়ে কাজ শুরু করবেন পরম।এই চলার পথেই বেরিয়ে আসবে নানা গোপন কাহিনি।
সত্য ঘটনা অবলম্বনেই হবে ছবি গল্প। ১৬ বছর আগে কলকাতার ডালহৌসি চত্বরে পারসি মহিলার খুনের ঘটনা গোটা দেশে সারা ফেলে দিয়েছিল। সেই খবরকেই প্রথম লিড নিউজে তুলে ধরেছিলেন ক্রাইম রিপোর্টার অনির্বাণ সেনগুপ্ত। দিনের পর দিন যিনি তাঁর ব্যক্তিগত এবং পেশাগত উভয় জীবনেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন।বহুদিন ধরে ক্রাইম রিপোর্টার হিসাবে কাজ করে চলেছেন অনির্বাণ সেনগুপ্ত। তবে এত বছর সাংবাদিকতার পরও কেরিয়ারে সেভাবে কোনও দিশা দেখতে পাননি অনির্বাণ। অথচ ঘটনাচক্রে সেইই অফিস পলিটিক্সের শিকার হয়ে যায়। অথচ একদিন এই অনির্বাণই সাংবাদিকতার জন্যই নিজের ভালোবাসাকেও ভুলেছিলেন। সংবাদিকতা তাঁর যে শুধুই পেশা নয়, নেশাও, স্বপ্নও বটে।সাংবাদিকদের চোখ নাকি শকুনের মত। খাবারের খোঁজে শকুনের লোভ যেমন থাকে ভাগারের দিকে। ঠিক সে রকমভাবেই খবরের খোঁজে থাকে সাংবাদিকদের চোখ। আর এই ভাবনার থেকেই পরিচালক অনিন্দ্য বিকাশ দত্তের নতুন সিনেমা।অনির্বাণ সেনগুপ্ত, পেশায় ক্রাইম রিপোর্টার। বেশ কিছুদিন ধরেই জীবনের উপর তিনি বীতশ্রদ্ধ। কর্মজীবনে দিনের পর দিন ব্রেকিং নিউজ না দিতে পারার হতাশা, অফিস রাজনীতি এই সব কিছু নিয়ে হতাশ।এমন এক সময়ে তাঁর প্রেমিকাও তাঁকে ছেড়ে চলে যান। বলা যায় নিজের কেরিয়ারের জন্যই তিনি প্রেমিকাকে তেমন ভাবে গুরুত্ব দেননি। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর তাঁর মাও মারা যান। বাবা ছিলেন বিখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক। যেখান থেকেই তাঁর সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন। একসময় তিনি দেখলেন জীবনে আর কিছুই পাওয়ার নেই। কোথাও গিয়ে তিনি মৃত।এমন সময় তিনি যেন ফের বেঁচে থাকার রাস্তা খুঁজে পেলেন।১৬ বছর আগের পারসি মহিলা খুনের রহস্য পুনরায় সমাধান করতে আগ্রহী হন নতুন পুলিশ কমিশনার, যা বহুদিন ধরে ফাইল বন্ধ অবস্থায় পড়েছিল।আততায়ীদের গুলিতে মৃত্যু হয় এক পার্সি মহিলার। যদিও সেই খুনের ঘটনার কোনও কিনারা করতে পারেনি কলকাতা পুলিস। তবে ১৬ বছর আগে ঘটে যাওয়া এই খুনের ঘটনারই একের পর এক তথ্য অনির্বাণের হাতে আসতে থাকে। আর এই তথ্যই ফের একবার নিজের পেশায় নতুন করে ফেরার উৎসাহ পান অনির্বাণ। তবে এবারও তাঁর এই কাজে আবারও তাঁকে অফিসের নানান বাধার সম্মুখীন হতে হয়।
এই ছবিতেই পরমব্রতর বিপরীতে দেখা যাবে ‘ঘরে বাইরে আজ’ খ্যাত অভিনেতা তুহিনা দাসকে। জয় সেনগুপ্ত থাকছেন পুলিশ আধিকারিক সুজয়ের ভূমিকায়। নিউস এডিটর অরুন নন্দীর চরিত্রে দেখা যাবে শঙ্কর চক্রবর্তী কে। অনির্বান সেনগুপ্ত র মায়ের ভূমিকায় দেখা যাবে তপতি মুন্সি কে। আগাগোড়া রহস্যে মোড়া এই ছবিতে রোলার কোস্টার রাইড যে দেখা যাবে তা আশা করাই যায়। চিত্রনাট্যের সংক্ষিপ্তসার শুনে সে ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে।এছাড়াও এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যাবে আরও অন্যান্য তারকাদেরও। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন সুরবেক বিশ্বাস এবং পরিচালক স্বয়ং। ছবির গানের দায়িত্বে রয়েছেন আশু চক্রবর্তী, শোভন গাঙ্গুলি, বিশ্ববিজয় সেন।
খুনের ঘটনা পুনরুত্থানের পর এই রহস্যের কি সমাধান হবে? অফিসের রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে অনির্বাণ সেনগুপ্ত কি পারবেন আলোয় ফিরতে?