এই লকডাউনে দর্শকেরা খুব মিস করেছেন শ্রীময়ী আর জুন আন্টিকে। রিপিট টেলিকাস্ট চললেও নতুন পর্বের অপেক্ষায় সকলে। তাই পয়লা বৈশাখের পর এবার পঁচিশে বৈশাখে কবিপ্রণাম পর্ব নিয়ে আসছে শ্রীময়ী। করেনার প্রকোপে বহুদিন ধরেই লন্ধ শ্যুটিং। সিনেমা হল, শপিং মল। পয়লা বৈশাখেও কোনও রকম আড়ম্বর বা অনুষ্ঠান হয়নি।করোনার প্রভাবে আপাতত স্তব্ধ রাজ্য সহ গোটা দেশ। জরুরী পরিষেবা ব্যতীত বন্ধ মানুষ জমায়েত করতে পারে এমন সমস্ত দোকানপাট, অফিস, আলাদতে তালা। স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ সিনেমা হল থেকে শুরু করে শুটিং। বাধ্য হয়েই নির্মাতাদের পুরনো এপিসোড দেখাতে হচ্ছে চ্যানেলে। এ সবকিছুর মধ্যেই রবীন্দ্রজয়ন্তীতে নতুন পর্ব আনছে ‘শ্রীময়ী’।
রবীন্দ্রজয়ন্তীতে বিশেষ এপিসোড আনছে এই ‘শ্রীময়ী’। লকডাউনের প্রভাবে যাতে বাঙালি দর্শকরা রবীন্দ্রজয়ন্তী থেকে বঞ্ছিত না থাকেন, তাই এমন সিদ্ধান্ত নেন ধারাবাহিকের নির্মাতারা। কিন্তু চাইলেই তো আর হবে না। সমস্ত বন্দোবস্ত করতে হবে। সেই সমস্যার সমাধানও হয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনে শ্রীময়ী-র বিশেষ পর্ব তৈরি হবে কীভাবে? কথায় বলে ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। নিজেদের বাড়িতে থেকেই শুট হবে নতুন পর্বের।প্রত্যেক অভিনেতা অভিনেত্রীদের বাড়িতেই শুটিং করার আবেদন জানানো হয়। তাঁরাও না করেননি। প্রত্যেকে বাড়ি থেকে তাঁদের অংশটুকু অভিনয় করে পাঠিয়ে দিয়েছেন নির্মাতাদের কাছে। কেউ আবার এখনও শুটিংয়েই ব্যস্ত। তবে গোটাটা হচ্ছে বাড়িতেই। লকডাউনের নিয়ম মেনে বাড়ির বাইরে কেউই বের হচ্ছেন না।
ডিজিটাল মাধ্যমেই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন শিল্পীরা। তেমনই কবিগুরুর জন্মদিনও বাঙালির খুব কাছের। কবিপ্রণামের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া, বাড়ির ছাদে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন কিংবা অনুষ্ঠান শুনতে যাওয়া এবছর নেই। তা বলে রবীন্দ্র স্বাদ থেকে বঞ্ছিত থাকবে বাঙালি? আর তাই স্টার জলসার এই বিশেষ উদ্যোগ। রবিঠাকুরের কথায় গানে সাজানো থাকবে এই পর্ব।বাড়িতে নিজেরাই শুটিং করতে সম্মতি জানিয়েছেন শিল্পীরা। চিত্রনাট্য থেকে ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল সমস্তাই বলে দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো শুট করে পাঠিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। এভাবেই করোনায় বন্দি মানুষ নতুন কিছু দেখতে পাবে। খুব তাড়াতাড়িই আসতে চলেছে এপিসোডের প্রোমো।
এই প্রসঙ্গে শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনি প্রত্যেক অভিনেতা অভিনেত্রীদের চিত্রনাট্যে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের ক্যামেরা অ্যাঙ্গেলও বুঝিয়ে দিয়েছেন। সবাই নিজের মতো করে শুটিং করছেন। তারপর পাঠাচ্ছেন তাঁকে। একবারে যে পছন্দ হচ্ছে, তা নয়। কখনও ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল পছন্দ হচ্ছে না, কখনও আবার অভিনয়। নির্দ্বিধায় তিনি আবার সেই অংশের শুটিং করার জন্য বলছেন অভিনেতা অভিনেত্রীদের। ক্লান্তি নেই তাঁদেরও। “ওরা খুব কো-অপারেট করছে। প্রোমোটা আপনারা অচিরেই দেখতে পারেন। প্রোমোটা দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না এটা বাড়িতে বসে হয়েছে।” বলছেন শৈবালবাবু।
সম্প্রতি ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন) ঠিক করেছে পরবর্তীতে আংশিক লকডাউন উঠলে শুটিংয়ের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধিনিষেধ থাকবে। এই মর্মে একটি খসড়া তারা ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এনেছেন ঠিকই কিন্তু সরকার, চিকিৎসক ও ইম্পার অন্য সংগঠনের অনুমোদনের পরই তা নিয়ম হিসাবে কাজ করবে।
বাংলা ধারাবাহিক যে এই প্রথমবার বাড়িতে শুটিং করে টেলিকাস্ট হবে, তা নয়। এর আগে ‘কে আপন কে পর’ ধারাবাহিকে নববর্ষ স্পেশ্যাল এপিসোডের জন্য বাড়িতেই শুটিং করে পাঠিয়েছিলেন কলাকুশলীরা। সেনগুপ্ত পরিবারের বর্ষবরণ উৎসব নিয়ে হয়েছিল এপিসোডটি। বাড়িতেই শুটিং করে তৈরি হচ্ছে একের পর এক শর্ট ফিল্ম। সেগুলো দর্শকের প্রশংসাও কুড়োচ্ছে। বাড়িতে বসেই যদি এসব সম্ভব হয়, তবে রবীন্দ্র-স্মরণই বা বাকি থাকে কেন?
শ্রীময়ীর দর্শকদের আর কিছু দিনের অপেক্ষা মাত্র!