১০ মে বিশ্ব মাতৃ দিবস। যদিও মায়েদের জন্যে কোনও একটি দিন নির্দিষ্ট করা যায় না। প্রতিদিনই তো মায়েদের জন্যে। তবুও আমাদের জীবনে মায়েদের অনন্য অবদানকে সম্মান জানাতে বছরের এই বিশেষ দিনটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার সারা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় মাতৃ দিবস।
মায়েদের জন্য বরাদ্দ কেবল একটি দিন? তা কখনো হয় নাকি? তবে কিনা, উদযাপনের ছুঁতো চাই আমাদের। তাই মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার দিনটায় পালিত হয় মাতৃ দিবস। সারা বিশ্ব জুড়েই। সবার মা যে একাবারে হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে এমন দূরত্বে নেই। আর তা না থাকলে এ বছর ছুট্টে গিয়ে দেখেও আসতে পারবেন না। কারণ টা লকডাউন। কিন্তু তা হলেও এই দিনটা একটু অন্যরকম ভাবে কাটানো যায় তো নিশ্চয়ই। সক্কাল বেলা অন্যদিনের চেয়ে একটু আগেই না হয় ফোন করা হল। খোঁজ নেওয়া হল শরীর স্বাস্থ্যের। দিনটা জুড়েই একটু ছুঁয়ে থাকা যায় নিশ্চয়ই। আহা, ভালোবাসা এখন ভার্চুয়াল। তাহলে দূরে থেকে কাছে রচিলে। প্রিয়তম মানুষটাকে জানিয়ে দিন আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবসের শুভেচ্ছা।
লকডাউনের এই গৃহবন্দি জীবনে ইতিমধ্যেই আমরা হাঁপিয়ে উঠেছি। কিন্তু যে মানুষগুলো সেই দীর্ঘকাল ধরে চার দেওয়ালের মধ্যে থেকেই বাড়ির সব কাজ সামলে সন্তানদের বড় করে তোলা, হেঁশেলে বাটনা বাটা, খুন্তি নাড়া থেকে বাড়ির প্রত্যেকটা সদস্যের খুঁটিনাটি প্রয়োজনের খেয়াল রেখে আসছেন, ‘ওঁরা’ কিন্তু হাঁপিয়ে পড়েননি। পড়েনও না! ওঁরা ‘মা’। জগতের সবচাইতে নিরাপদ আশ্রয়। সবথেকে ভরসার জায়গা। কালের নিয়মে পারিপার্শ্বিক সব বদলালেও মায়ের আদর-ভালবাসা, অনুভূতিতে কোনও রকম পরিবর্তন আসে না। সন্তানের ওপর মায়ের অধিকার, ভালবাসা স্মরণ করানোর জন্য যেমন কোনও নির্দিষ্ট দিনের দরকার হয় না, ঠিক তেমনই মায়ের প্রতি সন্তানের সম্মান প্রদর্শনের জন্যও নির্দিষ্ট কোনও দিনকে বেছে নেওয়াটা ভীষণই অমূলক! কিন্তু প্রত্যেক বছরই একটা নির্দিষ্ট দিনকে আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবস হিসেবে ধার্য করা হয় বিশ্বের সমস্ত মা’দের কুর্নিশ জানাতে। আজ সেই দিন- আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবস। জীবনের মৌলিক স্তরগুলোতে আমাদের সবথেকে বড় শিক্ষাগুরু, যাঁর হাত ধরে চলতে শেখা, খেতে শেখা.. বিশ্বের সেসমস্ত মায়েদের কুর্নিশ জানাতেই মীর আফসার আলির শর্ট ফিল্ম ‘মাতৃ’। মাতৃ দিবস উপলক্ষে মুক্তি পেল আজ।
মা নিত্যদিনের, তবুও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সারা দুনিয়া মাতৃ দিবস পালন করা শুরু করে, বিভিন্ন দিনে বিভিন্ন নামে। ব্রিটিনে মার্চ মাসের চতুর্থ রবিবার মাদার চার্চের স্মৃতিতে মাতৃ দিবস পালিত হয়। গ্রিসে ২ ফেব্রুয়ারি মাতৃ দিবস পালন করা হয়। অন্যদিকে থাইল্যান্ডে বর্তমান রানি সিরিকিটের জন্মদিনে অগস্ট মাসে পালিত হয় মাতৃ দিবস। তবে ভারত সহ পৃথিবীর সিংহভাগ দেশেই মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পালিত হয় বিশ্ব মাতৃ দিবস।
শর্টফিল্মটি আজ মাতৃদিবসে প্রকাশ্যে এনেছেন মীর। শর্টফিল্মে ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মীর নিজে। অন্যদিকে মায়ের ভূমিকায় রয়েছেন মঞ্জুলি পলি।৪ মিনিটের এই শর্ট ফিল্ম ‘মাতৃত্ব’-এর কথা বলে। অতি যত্নে সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে। এক ছেলে এবং তার মায়ের গল্পকে কেন্দ্র করেই এগিয়েছে ছবির গল্প। মায়ের চরিত্র মঞ্জুলা পলি এবং ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মীর। কেরিয়ার-অফিস, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে হইহুল্লোর নিয়ে রোজকার জীবনে আমরা সত্যিই এত ব্যস্ত যে ‘মা’র খেয়াল রাখা তো দূরের কথা, ‘মা তুমি ভাল আছ কিনা?’ সেই প্রশ্নটা করার কথাও সাধারণত উঁকি দেয় না আমাদের মাথায়! তবে মায়েরা কিন্তু সেই একইরকমভাবে আমাদের খেয়াল রেখে চলেছেন। সন্তান দূরদেশে থাকলেও সময়ে সময়ে খোঁজ নিয়ে একটা ফোন কিংবা একটা টেক্সট অন্তত চলে আসে। কখনও ব্যস্ততায় কেউ এড়িয়ে যায়। আবার কখনও বা দায়সারা উত্তর আসে। অসাড় হয়ে যাওয়া সেই সূক্ষ অনুভূতিগুলোতেই যেন মীরের শর্ট ফিল্ম ‘মাতৃ’ কড়া নাড়ে। আরও একবার মনে করিয়ে দেয় যে, মায়েদের কোনও ছুটি নেই। রোজকার জীবনে ওঁদের কোনও লকডাউন চলে না
মায়েদের ছুটি নেই। তাঁরা স্ত্রী, মেয়ে , পুত্রবধূ হিসাবে বা পেশাগত কর্মী হয়ে অফিসের দায়িত্ব সামলে নেওয়ার মাঝেই নিজের সহজাত ভালোবাসা দিয়ে এই বিশ্বের অন্যন্য এক অনুভূতি জন্ম দেন। আর এখানেই একজন মায়ের শ্রেষ্ঠত্ব। সন্তানের খেয়াল রাখার মধ্যেই তাঁরা সুখ খুঁজে নেন। কিন্তু সেই খেয়ালকে হয়তো সমস্ত সময় সন্তান কদর করতে পারেনা! কিন্তু যেদিন সেই কদর না করার খোঁচা সোজা মনে গিয়ে লাগে, সেদিন সন্তানের আত্মগ্লানি সব কিছুকে ছাপিয়ে যায়। সেই গ্লানির গল্পই বলেছে ‘মাতৃ’।
টার্টল ফিল্মস নিবেদিত এই ছোট দৈর্ঘ্যের ছবির কনসেপ্ট, চিত্রনাট্য এবং পরিচালনা রণজয়ের। মিউজিকের দায়িত্বে আশু চক্রবর্তী। যেহেতু সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাড়িতেই শুট হয়েছে, এক্ষেত্রে সম্পাদনা এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদনার কাজ করেছেন পৃথা চক্রবর্তী। সাদাকালো ফ্রেমে পারদর্শীতার সঙ্গে রং ব্যবহার করেছেন কালারিস্ট উত্তম উট্টু।
দেখে নিন সেই শর্ট ফিল্ম :