কখনও নিজের ঢাক পেটানো। কখনও আবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বেলাগাম ভাষায় ফেসবুকে আক্রমণ। আলটপকা কথাবার্তায় যেন লাগাম নেই বাংলাদেশের বিখ্যাত গায়ক মইনুল হাসান নোবেলের। প্রচারের আলোয় থাকতে বরাবরই ভালবাসেন তিনি। তা ভাল গান গেয়েই হোক কিংবা বিতর্কে জড়িয়ে। শিরোনামে থাকাটাই উদ্দেশ্য বাংলাদেশি গায়ক নোবেলের। আর এবার নেটিজেনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তিনি হাতিয়ার করেছিলেন একেবারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। ফল যা হওয়ার, তাই হল। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়লেন তিনি। ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে শেষমেশ ক্ষমাও চাইলেন নোবেল।
কোনও না কোনও কারণে প্রচারের আলোয় চলেই আসেন তিনি। যদিও বেশিরভাগইটাই বিতর্ক। সা রে গা মা পা-খ্যাত জনপ্রিয় গায়ক নোবেল আবারও নেটিজেনদের রোষের মুখে। তবে তার কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিষয়টি এতদূর গড়িয়েছে যে তাঁকে ডেকে পাঠাল বাংলাদেশের RAB। খুব সম্প্রতি তাহসিন এন রাকিব নামের একজন ইউটিবার ও সঙ্গীতশিল্পীর সঙ্গেও বিস্তর কথা কাটাকাটি হয় নোবেলের। বেশ কিছু অশালীন শব্দও প্রয়োগ করার অভিযোগ ওঠে এই গায়কের বিরুদ্ধে। আর সেই কারণে এবার ২০১৯ সালের সারেগামাপা-র দ্বিতীয় রানার্সআপ নোবেলকে ডেকে পাঠাল বাংলাদেশের RAB।
নিজের আসন্ন গান ‘তামাশা’র প্রচারের জন্যই এমন পোস্ট করেছেন বলে জেরার মুখে জানিয়েছেন নোবেল।বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলো-য় প্রকাশিত খবর অনুসারে, নোবেলের বিভ্রান্তিমূলক পোস্টে বাংলাদেশের সাইবার ক্রাইমের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম আগেই সতর্ক করেছিলেন গায়ককে। কিন্তু তাতেও কোনও ফল না হওয়ায় RAB ২-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনির জামান ডেকে পাঠান নোবেলকে। তারপরেই ক্ষমা প্রার্থনা করে ফের সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেন গায়ক।
জি বাংলা থেকে খ্যাতি অর্জন করা নোবেল আগাগোড়াই বিতর্কিত মন্তব্য করে শিরোনামে উঠে এসেছেন। “দশ বছরে কোনো লেজেন্ডারি গায়ক নেই, তিনি গান শিখিয়ে দেবেন” শীর্ষক মন্তব্য করে কিছুদিন আগেই নেটিজেনদের চক্ষুশূল হয়েছিলেন। এবার তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে এমন বিতর্কিত মন্তব্য করলেন, যার ফলে ক্ষোভে ফুঁসছে ভারতীয় বাঙালিরা।
ভিডিয়োতে নোবেল বলেছেন, কারোকে ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ দেওয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল না। নিজের একটি গানের প্রচারের কারণেই এসব করেছিলাম। আন্তরিকভাবে আমি দুঃখিত।
গত শনিবারই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘চাওয়ালা’ বলে সম্বোধন করে কিছু করুচিকর কথা লেখেন বাংলাদেশের গায়ক নোবেল। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। আর তাঁর এই পোস্টের পরেই শুধু ভারতীয়দেরই নয়, বাংলাদেশেরও কিছু নেটিজেনের সমালোচনার মুখে পড়তে হয় নোবেলকে। পুরো বিষয়টি নজরে আসতে তাঁকে ডেকে পাঠায় বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী RAB। বিতর্কের মুখে নিজের পোস্ট ডিলিট করেও দেন বাংলাদেশের এই গায়ক।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে অশালীন পোস্ট করেন নোবেল, এমনই অভিযোগ। সেখানে তিনি লেখেন, “স্ক্যান্ডাল আমার হবে না তো কার হবে। চায়ের দোকানদার নরেন্দ্র মোদির? কে দেখবে চাওয়ালার স্ক্যান্ডাল? অন্যদিকে আমাকে নগ্ন দেখার জন্য তো বিরাট স্যাটিসফেকশন। তাই না? নাহলে কি স্ক্যান্ডার এত ভাইরাল হয়?” এই পোস্টকে কেন্দ্র করেই বিতর্কের ঝড় ওঠে সোশাল মিডিয়ায়।
RAB-এর পাশাপাশিই কিছু দিন ধরে নোবেলকে পর্যবেক্ষণ করছিল বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। এ দিন নোবেল-কে RAB ২ কার্যালয়ে ডাকা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনতর কাণ্ড তিনি কেন ঘটান? এই প্রশ্নেরই উত্তর RAB এর তরফে থেকে নোবেলের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তার উত্তরে নোবেল জানান, এই সবই আসলে একটি গানের ‘RAB-এর পক্ষ থেকে যে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল, কী বৃত্তান্ত– এসব কিছুই ফেসবুক পোস্টে খোলসা করেছেন এই গায়ক। তবে সোশ্যাল মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, ‘কখনই মার্কেটিং পলিসি নয়। এই ধরনের কাজকর্ম আসলে নোবেলের স্বভাবসিদ্ধ।’শুধু তাই নয় গত বছর একটি বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলে বসে নোবেল মন্তব্য করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার বাংলা’ গানটির তুলনায় নাকি প্রিন্স মাহমুদের গান ‘সোনার বাংলা’ অনেক বেশী করে তাঁর দেশকে চেনায়। তাঁর সেই মন্তব্য ঘিরেও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।
আমি দু:খিত!
Posted by Noble Man on Sunday, 24 May 2020
এই ভিডিওটির পর নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে নোবেলকে ঘিরে। নিজের গানের প্রচারের জন্য কিকরে এমন গর্হিত একটা কাজ তিনি করতে পারলেন উঠেছে সেই প্রশ্নও।